মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ
লামা উপজেলার শিল্প নগরী খ্যাত আজিজনগরে ২নং চাম্বি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। এতে করে জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে ৫শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী। ব্যবহার অনুপযোগী বিদ্যালয় ভবনগুলোতে শুরু হয়নি সংস্কার বা পূর্ণনির্মান কাজ। এছাড়া শ্রেণী কক্ষের স্বল্পতার কারণে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে পাঠদান। দীর্ঘদিনেও ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবনগুলো মেরামত বা সংষ্কার না হওয়ায় রোদ-বৃষ্টির মাঝে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপকালে তারা জানায়, বিদ্যালয়ে যে অবস্থা হয়েছে তা দেখে আমাদের বাবা-মা বিদ্যালয়ে না যাওয়ার জন্য বলেন। তারা বলেন, আমার ছেলে বাচঁলে হবে, লেখাপড়ার দরকার নেই। অত্র বিদ্যালয়ে তিনটি ভবন মধ্যে ৮টি কক্ষ রয়েছে। ১৯৯৬ সালে ভবনটি র্নিমাণ করা হলেও ২০১৩ ও ২০১৪ সালে পরপর দুই বার ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে চিন্তিত করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রতি শ্রেণীতে শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী থাকায় শাখা করে শ্রেণী কার্যক্রম দুই শিফটে পরিচালিত করতে হচ্ছে। প্রথম শিফটে প্রাক-প্রাথমিক, ১ম ও ২য় শ্রেণী এবং ২য় শিফটে ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীর পাঠদান চলে। স্কুলের শ্রেণী কার্যক্রমের জন্য ৭টি কক্ষের প্রয়োজন থাকলেও ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষ বাদ দিলে অবশিষ্ট থাকে ৩টি কক্ষ। পরবর্তীতে ২০০৩-০৪ সালে পর্যায়ক্রমে দুই কক্ষ বিশিষ্ট দুইটি ভবন র্নিমান করা হলেও উক্ত ভবনে নি¤œমানের কাজ হওয়ায় তাতে ফাটলে সৃষ্টি হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা না করার র্নিদেশ থাকলেও নিরুপায় হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় যে কোন মুহুর্তে দূর্ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অভিভাবকমহল জানায়, ঝুঁকিপূর্ণ এসব বিদ্যালয়ের বিষয়টি বারবার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেও কোন সমাধান পাননি তারা। তাদের দাবি অনতিবিলম্বে স্কুল ভবন গুলো সংস্কার করে বিদ্যালয় গুলোকে স্বাভাবিক পাঠদানে পরিবেশ নিশ্চিত করা হউক।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলামকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, পর্যাপ্ত পরিমান নিরাপদ কক্ষ না থাকায় নিরুপায় হয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ের বেহাল অবস্থা সর্ম্পকে আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তিনি মনে করেন কচিকাঁচা বালক-বালিকাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ঝুুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো ভেঙ্গে নতুন ভবণ নির্মাণ করা খুব জরুরী।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রফিক আহম্মদ চৌধুরী সাংবাদিককে বলেন, দরিদ্র এলাকার শিশুদের নিরাপত্তা ও লেখাপড়া নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অতি দ্রুত নতুন ভবণ নির্মান করার আহবান জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। বাংলাদেশ সরকার যখন শিক্ষা ক্ষেত্রে অতি মনোযোগী সেই সময় লামা উপজেলাধীন আজিজনগর ইউনিয়নের ২নং চাম্বি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা জীবনের ঝুুঁকি নিয়ে লেখাপড়া করছে। বিদ্যালয়ের ভবনের বিভিন্ন জায়গাতে বিশাল বিশাল ফাটল থাকার কারণে অবিভাবকবৃন্দ তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে আগ্রহ হারাচ্ছে।
লামা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার যতীন্দ্র মোহন মন্ডল বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শ্রেণী কার্যক্রম পরিচালনা না করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে গাছের নিচে বা স্থানীয় অনুদান সংগ্রহ করে টিনসেট স্কুল নির্মাণ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নতুন ভবন তৈরি করতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।
পাঠকের মতামত: